05.বাজারে মুসলিমদের দাসী কেনাবেচা

Print Friendly, PDF & Email

নবী মুহাম্মদের সাহাবীগণের মধ্যে অনেকেই দাসদাসী কেনাবেচার সাথে জড়িত ছিল। নবী নিজেও দাসদাসী বিক্রি করেছেন, কিনেছেন। তবে এই দাসদাসীর বাজার কীরকম ছিল, সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার জন্য কয়েকটি রেফারেন্স আপনাদের ভালভাবে পড়তে হবে। আসুন আশরাফুল হিদায়া গ্রন্থ থেকে এই বিষয়ক ফিকহী মাসালাগুলো পড়ে নিই, যার থেকে ধারণা পাওয়া যাবে, সেই সময়ের দাসদাসীর বাজারগুলো কেমন ছিল। এগুলো পড়ুন এবং আপনার কন্যা সন্তানকে সেই জায়গাতে কল্পনা করুন, তখন বুঝতে পারবেন এগুলো কতখানি অমানবিক [1]

ইমাম কুদুরী (রহ.) তাঁর মুখতাসারুর কুদুরী গ্রন্থে বলেন, যদি কেউ দাসী ক্রয় করার ইচ্ছা পোষণ করে তার জন্য দাসীর ঐ সকল অঙ্গসমূহ স্পর্শ করা জায়েজ, যা দেখা জায়েজ। এমনকি যদি স্পর্শ করার দ্বারা ক্রেতার মধ্যে কামভাব জাগ্রত হয়, তবুও।
মুসান্নিফ (রহ.) বলেন, ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) তাঁর জামিউস সাগীরের মধ্যে এইভাবেই মাসআলাটি বর্ণনা করেছেন। জামিউস সাগীরের ইবারত এই- “ইমাম মুহাম্মদ (রহ.) ও আবু ইউসুফ (রহ.) এ দুজন ইমাম আবু হানীফা (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি কোন দাসী ক্রয় করার ইচ্ছা পোষণ করেছে তার জন্য দাসীর পায়ের নলি, বুক ও হাত স্পর্শ করাতে কোন ক্ষতি বা দোষ নেই এবং এসব অঙ্গ অনাবৃত অবস্থায় দেখাতেও কোন সমস্যা নেই”। “কামভাব জাগ্রত হলেও স্পর্শ করা বৈধ হবে”।
“স্পর্শ করার দ্বারা কামভাব জাগ্রত হওয়ার আশংকা থাকলেও স্পর্শ করা জায়েজ। তাদের মতে ক্রয় করার উদ্দেশ্যে দাসীর দিকে তাকানো বৈধ, যদিও এতে উত্তেজিত হওয়ার আশংকা থাকে”।
“পূর্বযুগের ইমামগণ দাসী ক্রয় করার সময় তাদের ত্বক সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার উদ্দেশ্যে স্পর্শ করাকে বৈধ বলতেন, কেননা সেই সময়ের লোকজন সাধারণভাবে নেক ছিলেন”।
“পরবর্তীকালে ওলামাগণ কামভাব না থাকা অবস্থায় স্পর্শ করার অনুমতি দিয়েছেন। আর এর উপরেই বর্তমান ফতোয়া”।
“যখন কোন কিশোরী দাসী প্রথম ঋতুমতী হয় তারপর থেকে উক্ত দাসীকে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে নিম্নাঙ্গ আবৃত হয় এমন এক কাপড় পরিয়ে তাকে দর্শন করানো যাবে না। কারণ ঋতুমতী হওয়ার অর্থ হল সে বালেগা হয়েছে। আর বালেগা দাসীর পেট ও পিঠ সতরের অন্তর্ভুক্ত যা ইতঃপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং এখন যদি শুধুমাত্র নিম্নাঙ্গের পোশাক পরিধান করানো হয় তাহলে বুক ও পিঠ খোলা থাকবে তাই তাকে উর্ধাঙ্গের কামিস তথা পোশাক পরতে হবে। উল্লেখ্য যে ইজার এমন পোশাককে বলা হয় যার দ্বারা শুধুমাত্র নাভি থেকে নিচের অংশ ঢাকা যায়”।
“এ আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল এর চেয়ে কম বয়সী দাসীদের বুক পিঠ খোলা অবস্থায় বাজারে নিয়ে যাওয়াতে কোন দোষ নেই”।
“যে কিশোরী দাসী কামভাবের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে (অর্থাৎ সঙ্গমের উপযুক্ত হয়েছে, এতে সাত বা নয় বছর বয়সের কোন শর্ত নেই) তাকে বিক্রির জন্য এক কাপড়ে পেশ করা যাবে না”।

2

তথ্যসূত্র

  1. আশরাফুল হিদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬১৮, ৬১৯ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন