10.তালাক দেয়ার অধিকার স্বামীর

Print Friendly, PDF & Email

ইসলামের বিধান হচ্ছে, স্বামীই শুধু তালাক দিতে পারে। কিন্তু স্ত্রী তালাক দেয়ার মত অধিকার প্রাপ্ত নন।আসুন একটি ওয়াজ শুনি, সাথে এই সম্পর্কিত দলিলগুলো দেখে নিই,

এর অর্থ হচ্ছে, ইসলামি শরিয়তের বিধান হচ্ছে, তালাক দেয়ার অধিকার একমাত্র স্বামীর। স্ত্রীর তালাক দেয়ার কোন অধিকার নেই, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সে তালাক চাইতে পারে [1]

মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-১৩ঃ বিবাহ
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
পরিচ্ছদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ – খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৯-(৬) সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে রমণী বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চায়, সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না। (আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ, দারিমী)(1)
(1) সহীহ : আবূ দাঊদ ২২২৬, তিরমিযী ১১৮৭, ইবনু মাজাহ ২৫০০, দারিমী ১৩১৬, আহমাদ ২২৪৪০, ইরওয়া ২০৩৫, সহীহ আল জামি‘ ২৭০৬, সহীহ আত্ তারগীব ২০১৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
ব্যাখ্যাঃ
ব্যাখ্যা: তালাক স্বামীর অধিকার, স্ত্রীর নয়। স্ত্রীর সঙ্গত কারণ থাকলে খুলা‘র মাধ্যমে সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। কোনো মহিলা একান্ত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে তালাক প্রার্থনা করবে না। কোনো কোনো বর্ণনায় এ কথাও এসেছে, কোনো মহিলা নিজের জন্য অথবা অন্যের জন্য তালাক প্রার্থনা করবে না।
যে নারী বিনা কারণে তার স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করবে তার জন্য জান্নাতের ঘ্রাণ হারাম অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এটা ভীতি ও ধমকিমূলক বাক্য। মুহসিন বা নেককারগণ যেমন প্রথম ধাপেই জান্নাতের সুঘ্রাণ পাবেন তারা সেই সুঘ্রাণ পাবে না। ‘আল্লামা কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ এটাও হতে পারে যে, যদি সে জান্নাতে প্রবেশ করে তবে সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

এবারে আসুন দেখে নেয়া যাক, তাফসীরে মা’আরেফুল কোরআনে কী বলা আছে, [2]

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম আইনে নারীদের কিছু অধিকার দেয়া হয়েছে, সেটি আইয়্যুব খানের শাসনামলে ইসলামের বিধানকে অনেকটাই লঙ্ঘন করে। সামরিক শাসক ছিলেন বিধায় আইয়্যুব খানের বিরুদ্ধে ইসলামিস্টরা সেইসময়ে আন্দোলন করতে পারেনি।এই মুসলিম আইনে নারীর হাতে থাকা তালাকের বিধানেও অবশ্য বলা আছে, স্বামীর হাতেই থাকবে তালাকের অধিকার। মুসলিম আইনে তালাকের প্রকারগুলো হচ্ছে,

১. খোলা তালাক,
২. মুবারাত এবং
৩. তালাক-ই তাওফিজ

হানাফি ফিকাহ শাস্ত্রের বুনিয়াদি গ্রন্থ আল হেদায়ার তালাক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, একজন মুসলিম নারী শুধু খোলা তালাকের মাধ্যমে বিয়ে বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। যেটি সম্পূর্ণ স্বামীর পক্ষেই থাকে। অন্যান্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বা ইসলামিক শরীয়া আইনে পুরুষই তালাক দেয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত। নারীর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তালাক প্রদানের ক্ষমতা নেই। তবে শুধুমাত্র দুই একটি ক্ষেত্রে, যেমন স্বামী যৌন অক্ষম হলে কিংবা পাগল হলে, স্ত্রী তালাকের জন্য আবেদন করতে পারে বিচারকের কাছে। বিচারকের মর্জি হলে তালাক পাওয়া যাবে। তবে স্বামী যেকোন অবস্থাতেই তালাক দিতে পারেন। তালাকের ক্ষেত্রে স্বামীর অধিকারই মূখ্য, কারণ স্বামীই হচ্ছে মালিক। এবারে আসুন ফিকহে ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু গ্রন্থ থেকে তৃতীয় খলিফা ওসমানের সময়ে আইনটি দেখে নিই, [3]

2
4

এবারে আসুন একটি ফতোয়া দেখে নিই [4]

স্ত্রী তালাক দিতে পারে না

তথ্যসূত্র

  1. মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত), হাদিস একাডেমি, হাদিস নম্বরঃ ৩২৭৯ []
  2. তাফসীরে মা’আরেফুল কোরআন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬৫০ []
  3. ফিকহে ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু, ড মুহাম্মদ রাওয়াস কালা’জী, ভাষান্তর ও সম্পাদনাঃ মুহাম্মদ খলিলুল রহমান মুমিন, আধুনিক প্রকাশনী, পৃষ্ঠা ১৭৬ []
  4. ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৩৮২ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন