03.নাস্তিক অর্থ কী? নাস্তিক কে?

Print Friendly, PDF & Email

আসুন প্রখ্যাত কমেডিয়ান জর্জ ক্যারলিনের একটি ভিডিও দেখে নেয়া যাক,

এবারে আসুন নাস্তিক শব্দের অর্থ জেনে নেয়া যাক।

নাস্তিক = ন+অস্তি+ইক।
ন = নঞর্থক, নাই, প্রয়োজন হয় নাই।
অস্তি = অস্তিত্ব, ভৌত জগত, প্রকৃতি ইত্যাদি।
ইক = মতবাদী, মতবাদ পোষণকারী।

প্রাচীন বৈদিক যুগে যে বা যারা বেদ মানতো না তাদেরকে ‘নাস্তিক’ বলা হতো। কিন্তু মূল অর্থ হিসেবে “নাস্তিক” শব্দটি একটি দার্শনিক অভিধা। ‘ন + অস্তি’ যুক্তিবাদের আলোকে একটি দার্শনিক সিদ্ধান্ত বা বিশ্বাসের অবস্থান। এখানে ন = নাই, প্রয়োজন নাই। আর অস্তি = অস্তিত্ব।

নাস্তিক্যবাদ (ইংরেজি ভাষায়: Atheism; অন্যান্য নামঃ নিরীশ্বরবাদ, নাস্তিকতাবাদ) একটি দর্শনিক অবস্থানের নাম যাতে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়না এবং সম্পূর্ণ ভৌত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়া হয়। কোন অলৌকিক স্রষ্টার ধারণাকে বিশ্বাস করা বা আস্তিক্যবাদ এর বর্জনকেই নাস্তিক্যবাদ বলা যায়। নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস বা কোন ধর্ম নয় বরং অবিশ্বাস এবং এটি তথ্য প্রমাণ ও যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বাসের অনুপস্থিতি বা বিশ্বাসের অভাবকেই তাই নাস্তিকতা বলা যেতে পারে।

নাস্তিক্যবাদ আসে যুক্তিবাদ থেকে। নাস্তিকতা কোন ধর্ম নয়, বরঞ্চ বেশিরভাগ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের মৌলিক দাবী, অতিপ্রাকৃতিক সত্ত্বার অস্তিত্বে অবিশ্বাস। যাবতীয় বিশ্বাস, ধর্মবিশ্বাস বা ধর্মতত্বকে যাচাই বাছাই এবং যুক্তিসঙ্গত উপায়ে বাতিলকরণ। নাস্তিকতা বলে না যে “ঈশ্বর নেই”; নাস্তিকতার দাবীটি হচ্ছে, “মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঈশ্বর আছে বা কোন অলৌকিক শক্তি আছে তার কোন উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ নেই”। এবং যেহেতু কোন প্রমাণ নেই, তাই ঈশ্বরের এই দাবীকে নাস্তিক্যবাদ বাতিল করে এবং ভ্রান্ত বলে মনে করে।

তবে ঈশ্বরের কোন উপযুক্ত প্রমাণ ধার্মিকগণ দেখাতে সমর্থ হলে তা মেনে নিতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। যখনই পাওয়া যাবে, সেগুলো মেনে নেয়া হবে। তবে যুক্তিহীন বিশ্বাস যেহেতু যাচাই করবার কোন উপায় নেই, তাই একে খারাপ কাজে লাগাবার সম্ভাবনাই বেশি থাকে- যেহেতু এটা যুক্তিপ্রমাণহীন একটি বিশ্বাসমাত্র। এবং সত্যিকার অর্থে ঘটেছেও তাই। এছাড়া ধর্মগ্রন্থে যেই ঈশ্বরের কথা বলা আছে, সেই ঈশ্বর শুধু নোংরাই নয়, সাম্প্রদায়িক, হিংস্র, তোষামদপ্রিয় এবং লোভী। সে প্রাচীন কালের রাজাদের চরিত্রের অধিকারী, যে শুধু নিজের উপাসনা আর তোষামোদ চায়, তা না পেলেই ভয় দেখায়। তাই ধর্ম ও ঈশ্বর মানব সভ্যতার জন্য হুমকি স্বরূপও হতে পারে।