02.আবু বকরের কুফরি

Print Friendly, PDF & Email

খাদিজার গর্ভে জন্ম নেয়া মুহাম্মদের সন্তান ফাতিমা ছিল নবী মুহাম্মদের সর্বাধিক প্রিয় সন্তান। নবী ফাতিমাকে জান্নাতের নারীদের সর্দারনী বলেও ঘোষণা দিয়ে যান [1]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫০/ আম্বিয়া কিরাম (আঃ)
পরিচ্ছেদঃ ২০৯১. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট আত্মীয়দের মর্যাদা এবং ফাতিমা (রাঃ) বিনতে নবী (সাঃ) এর মর্যাদা। নবী (সাঃ) বলেছেন, ফাতিমা (রাঃ) জান্নাতবাসী মহিলাগণের সরদার
৩৪৪৭। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ) … আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারবর্গের প্রতি তোমরা অধিক সম্মান দেখাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)

নবী মুহাম্মদ সেই সাথে এটিও অনেকবারই বলেছেন যে, ফাতিমাকে যে কষ্ট দেয় সে যেন আমাকেই কষ্ট দেয়। কারণ ফাতিমা আমারই অঙ্গ। [2]

ফাতিমা

আসুন হাদিসগুলো পড়ে দেখি। হাদিসগুলো বর্ণিত হয়েছে হযরত আলীর দ্বিতীয় বিয়ের প্রেক্ষাপটে। নবী নিজে অসংখ্য বিয়ে করলেও তিনি আলীকে আরেকটি বিবাহ করতে অনুমতি দেন নি। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ফাতিমার সতীন আসলে তার কষ্ট হবে। অথচ, নিজে কিন্তু অনেকগুলো বিয়েই করেছেন [3] [4]

সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ৫৪/ বিয়ে-শাদী
পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা
৪৮৫০। কুতায়বা (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরা, আলী ইবনু আবূ তালিবের কাছে তাদের মেয়ে শাদী দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আলী ইবনু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে শাদী করতে পারে। কেননা, ফাতেমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

ফাতিমার সতীন

আরেকটি হাদিস পড়ি [5]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৬/ সাহাবী (রাঃ) গণের ফযীলত
পরিচ্ছেদঃ ১৫. নবী (ﷺ) এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) এর ফযীলত
৬০৮৮। আহমদ ইবনু হাম্বল (রহঃ) … আলী ইবনু হুসায়ন (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, হুসায়ন ইবনু আলী (রাঃ) এর শাহাদতের পর ইয়াযীদ ইবনু মুআবিয়া (রাঃ) এর কাছ থেকে তারা যখন মদিনায় এলেন, মিসওয়ার ইবনু মাখরামা তখন তার সাথে দেখা করলেন এবং তাকে বললেন, আপনার কোন প্রয়োজন থাকলে আমাকে বলবেন। আমি বললাম, না। মিসওয়ার বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরবারিখানা কি আপনি আমাকে দান করবেন? কারণ আমার ভয় হয় যে, আপনার লোকেরা এটি আপনার কাছ থেকে কবজা করে নিবে। আল্লাহর কসম, আপনি যদি সে তরবারিটি আমাকে দিয়ে দেন তাহলে যতক্ষন আমার প্রাণ থাকে এটি কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।
(মিসওয়ার আরো বলেন) ফাতিমার জীবিত থাকাকালে আলী (রাঃ) আবূ জাহলের কন্যাকে বিয়ের প্রন্তাব দিয়েছিলেন। তখন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ বিষয় নিয়ে লোকদের সামনে এ মিম্বরে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিতে শুনেছি। আমি সে সময় সদ্য বালিগ বয়সের। তখন তিনি বললেন, ফাতিমা আমারই অঙ্গ। আমার ভয় হচ্ছে, সে তার দ্বীনের ব্যাপারে ফিতনায় না পতিত হয়। অতঃপর তিনি আবদ ই-শামস গোত্রীয় তাঁর জামাতার আলোচনা করলেন। তার আত্নীয়তার সুন্দর প্রশংসা করলেন, এবং বললেন, সে আমায় যা বলেছে সত্য বলেছে, সে অঙ্গীকার করেছে, আর আমি কোন হালালকে হারাম করি না বা হারামকে হালাল করি না। তবে আল্লাহর কসম, আল্লাহর রাসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে কখনো এক জায়গায় একত্রিত হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আলী ইবনু হুসাইন (রহঃ)

উপরে বর্ণিত হাদিসগুলো থেকে জানা গেল, নবী মুহাম্মদ নিজেই বলেছেন, যে ফাতিমাকে কষ্ট দেয় সে যেন আমাকেই কষ্ট দেয়। মুহাম্মদ এটিও বলেন, ফাতিমা আমারই অঙ্গ। এখন আসুন দেখি, ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর এবং দ্বিতীয় খলিফা উমর, এই দুইজন ফাতিমাকে কষ্ট দিয়েছিল কিনা। উল্লেখ্য, নবী মুহাম্মদের জীবদ্দশায় নবী ইহুদীদের থেকে দখল করা জমি ফাদাক তার কন্যা ফাতিমাকে দিয়েছিলেন, যেই জমিতই আবু বকরের খিলাফত আমলে আবু বকর দখল করে নেন। ফাতিমা সেই জমি বারবার তার কাছে ফেরত চাইলে আবু বকর ফেরত দিতে রাজি হয় না [6] [7] [8] [9] [6] [10]

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেখে যাওয়া সস্পত্তির) উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা ফাতিমা ও আব্বাস (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই হবে সাদাকা। এ মাল থেকে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ভোগ করবেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি এতে যেভাবে করতে দেখেছি, তা সেভাবেই বাস্তবায়িত করব। রাবী বলেন, এরপর থেকে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পরিহার করেছিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে কথা বলেন নাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

ফাতিমা ও আবু বকর

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৪৮/ জিহাদ
পরিচ্ছেদঃ ১৯৪১. খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) নির্ধারিত হওয়া
২৮৭৪। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উম্মূল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফাতিমা বিনতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) এর নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পর তাঁর মিরাস বন্টনের দাবী করেন। যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফায় (বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ) হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক তাঁকে প্রদত্ত সম্পদ থেকে রেখে গেছেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের পরিত্যাক্ত সম্পদ বন্টিত হবে না আমরা যা ছেড়ে যাই, তা সাদকা রূপে গণ্য হয়।’ এতে ফাতিমা বিনতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্ট হলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) সিদ্দীক এর সঙ্গে কথাবার্তা বলা ছেড়ে দিলেন। এ অবস্থা তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত বহাল ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর ফাতিমা (রাঃ) ছয় মাস জীবিত ছিলেন।
আয়িশা (রাঃ) বলেন, ফাতিমা (রাঃ) আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)-এর নিকট রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক ত্যাজ্য খায়বার ও ফাদাকের ভূমি এবং মদিনার সাদকাতে তাঁর অংশ দাবী করেছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে তা প্রদানে অস্বীকৃতি জানান এবং তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা আমল করতেন, আমি তাই আমল করব। আমি তাঁর কোন কিছুই ছেড়ে দিতে পারি না। কেননা, আমি আশঙ্কা করি যে, তাঁর কোন কথা ছেড়ে দিয়ে আমি পথভ্রষ্ট হয়ে না যাই। অবশ্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মদিনার সাদকাকে উমর (রাঃ) তা আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে হস্তান্তর করেন। আর খায়বার ও ফাদাকের ভূমিকে পূর্ববৎ রেখে দেন।
উমর (রাঃ) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ সম্পত্তি দু’টিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জরুরী প্রয়োজন পূরণ ও বিপথকালীন সময়ে ব্যায়ের জন্য রেখেছিলেন। সুতরাং এ সম্পত্তি দু’টি তারই দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে, যিনি মুসলমানদের শাসন ক্ষমতার অধিকারী খলিফা হবেন।’ যুহরী (রহঃ) বলেন, এ সম্পত্তি দু’টির ব্যবস্থাপনা অদ্যবধি সেরূপই রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭৪। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর তার সহধর্মিণীগণ আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আপন আপন উত্তরাধিকার চাওয়ার জন্য উসমান (রাঃ) কে পাঠানোর ইচ্ছা করলেন। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এরূপ বলেননি, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নেই? আমরা যা রেখে যাব সবই হবে সাদাকাতুল্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
৬৪/ মাগাযী (যুদ্ধ)
পরিচ্ছেদঃ ৬৪/১৪. দু’ ব্যক্তির রক্তপণের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বানী নাযীর গোত্রের নিকট গমন এবং তাঁর সঙ্গে তাদের বিশ্বাসঘাতকতা বিষয়ক ঘটনা।
৪০৩৫. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ফাতিমাহ এবং ‘আব্বাস (রাঃ) আবূ বাকরের কাছে এসে ফাদাক এবং খাইবারের (ভূমির) অংশ দাবী করেন। (৩০৯২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৭৩/ উত্তরাধিকার
পরিচ্ছেদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেখে যাওয়া সস্পত্তির) উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা ফাতিমা ও আব্বাস (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই হবে সাদাকা। এ মাল থেকে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ভোগ করবেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি এতে যেভাবে করতে দেখেছি, তা সেভাবেই বাস্তবায়িত করব। রাবী বলেন, এরপর থেকে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পরিহার করেছিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে কথা বলেন নাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

মুসনাদে আহমাদ
মুসনাদে আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) (আবু বকরের বর্ণিত হাদীস)
পরিচ্ছেদঃ
৫৫। একবার ফাতিমা (রাঃ) আবু বাকর আস সিদ্দিক (রাঃ) এর নিকট দূত পাঠিয়ে তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সেই সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইলেন, যা তাঁকে আল্লাহ মদীনায় ও ফাদাকে দিয়েছিলেন এবং খায়বারের এক পঞ্চমাংশের অবশিষ্টাংশ। আবু বাকর (রাঃ) জবাব দিলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমরা (নবীরা) উত্তরাধিকার সূত্রে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করিনা। আমরা যে সম্পত্তি রেখে যাই তা সাদাকা। এই সম্পত্তি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় যে অবস্থায় ছিল, আমি তাকে কখনো সেই অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিবর্তিত করবো না এবং সাদাকার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা করেছেন, আমি অবশ্যই ঠিক তাই করবো।
এভাবে আবু বাকর উক্ত সম্পত্তি থেকে ফাতিমাকে কিছুই দিলেন না। এ জন্য ফাতিমা আবু বকরের (রাঃ) ওপর রাগান্বিত হলেন। আবু বাকর (রাঃ) বললেনঃ সেই আল্লাহর কসম যার হাতে আমার জীবন, আমার নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আপন জনের সাথে সম্পর্ক বহাল রাখা আমার নিজের আপনজন অপেক্ষা অধিক প্রিয়। তবে এই সম্পত্তির ব্যাপারে তোমাদের ও আমাদের মধ্যে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমি ন্যায়নীতি থেকে বিচ্যুত হইনি এবং এই সম্পত্তির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যা করতে দেখেছি, আমি তা করা থেকে বিরত হইনি।(১)
(১). বুখারী-৪২৪০, মুসলিম-১৭৫৯, অত্র গ্রন্থের হাদীস নং ৯ দ্রষ্টব্য
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, রাতের অন্ধকারে জনমানবশূণ্য জানাজা হয় নবী কন্যা ফাতিমার। হযরত আলী নিজেই জানাজা পড়িয়ে দাফন করে ফেলেন ফাতিমার লাশ। মৃত্যুর সময় ফাতিমা ওয়াসিয়ত করে যান যে, তার জানাজায় যেন আবু বকর এবং উমরের পক্ষ থেকে কেউ না আসে। আরো উল্লেখ্য, ফাতিমার মৃত্যুর পরে আলী আবু বকরকে একবার আলোচনার জন্য ডাকেন, এবং শর্ত দেন যে, এই আলোচনায় উমর যেন না থাকে। নিচের হাদিসগুলো দেখুন [11] [12]

সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৩৩/ জিহাদ ও এর নীতিমালা
পরিচ্ছেদঃ ১৬. নবী (ﷺ) এর বানীঃ আমাদের (নবীগনের) মীরাস বণ্টন হয় না, আমরা যা কিছু রেখে যাই সবই সদাকা
৪৪২৮। মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ফাতিমা বিনত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বাকর এর নিকট লোক পাঠালেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্পদ থেকে তার প্রাপ্য মীরাস এর দাবী করে, যা আল্লাহ তা’আলা তাকে মদিনা ও ফাদাক এর ফাই এবং খায়বারের অবশিষ্ট এক পঞ্চমাংশ থেকে প্রদান করেছিলেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গিয়েছেনঃ আমাদের (নবীগণের) (পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে) মীরাস হয় না। আমরা যা রেখে যাই তা হবে সাদাকা। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারবর্গ তা থেকে জীবিকা গ্রহণ করবেন। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়কালে সাদাকার যে অবস্থা চালু ছিল তা আমি পরিবর্তন করব না। আর এতে আমি নিশ্চয়ই সে কাজ করবো, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করে গিয়েছেন।
অতএব, আবূ বাকর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) কে তা থেকে কিছু প্রদান করতে অস্বীকার করলেন। সুতরাং ফাতিমা (রাঃ) এতে রাগাম্বিত হয়ে তাঁকে পরিত্যাগ করলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে (এ ব্যাপারে) আর কোন কথা বলেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পর তিনি ছয় মাস জীবিত ছিলেন। এরপর যখন ইন্তিকাল করলেন তখন তাঁর স্বামী আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাকে রাতে দাফন করলেন এবং ফাতিমা এর মৃত্যু সংবাদ পর্যন্ত আবূ বাকর(রাঃ) কে দেননি। আলী (রাঃ) তাঁর জানাযার সালাত আদায় করলেন। ফাতিমা (রাঃ) এর জীবিতকাল পর্যন্ত আলী (রাঃ) এর প্রতি জনগণের বিশেষ মর্যাদাবোধ ছিল।
এরপর যখন তাঁর ইন্তেকাল হল তখন তিনি লোকের চেহারায় অন্যভাব দেখতে পেলেন। অতএব, তিনি আবূ বাকর (রাঃ) এর সঙ্গে আপোষ রফা করে, তার বায়আত গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহন করলেন। কয়েক মাস তিনি তার বায়আত করেননি। তারপর আলী (রাঃ), আবূ বাকর (রাঃ) এর নিকট লোক পাঠিয়ে সংবাদ দিলেন যে, আপনি একাকী আমাদের এখানে আসুন। আপনার সাথে অন্য কাউকে আনাবেন না। (কেননা তিনি উমার (রাঃ) এর আগমনকে অপছন্দ করছিলেন।) উমর (রাঃ) আবূ বকরকে বললেন, আল্লাহর কসম! আপনি একাকী তাঁদের কাছে যাবেন না। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, তারা আমার সাথে কীই বা করবেন। আল্লাহর কসম! আমি একাকীই যাব। পরিশেষে আবূ বাকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন।
এরপর আলী ইবনু আবূ তালেব (রাঃ) তাশাহুদ (তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য বানী) পাঠ করলেন, তারপর বললেন, হে আবূ বাকর! আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যে সম্মান প্রদান করেছেন, তা আমরা জানি। আর আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যে নিয়ামত প্রদান করেছেন, তাতে আমার কোন ঈর্ষা নেই। কিন্তু আপনি আমাদের উপর শাসন ক্ষমতায় (খিলাফতের) একচ্ছত্রতা দেখিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আত্নীয়তার কারণে আমরা মনে করতাম যে, আমাদেরও অধিকার আছে। আবূ বাকরের সঙ্গে তিনি কথা বলতে থাকলেন।
পরিশেষে আবূ বাকর (রাঃ) এর দু’চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হল। এরপর যখন আবূ বাকর (রাঃ) কথা বলতে শুরু করলেন, তখন তিনি বললেনঃ যার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আত্নীয়তার সৌহার্দ্য-সংযোগ রক্ষা করা আমার আত্নীয়তার প্রতি সংযোগ রক্ষার চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয়। তবে আমার এবং আপনাদের মধ্যে এই সম্পদ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে তাতে আমি সত্য পরিহার করি নি। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এতে যা করতে দেখেছি তা আমি পরিত্যাগ করি নি।
এরপর আলী (রাঃ), আবূ বাকর (রাঃ) কে বললেন যে, আমি বায়আতের জন্য আপনাকে আজ বিকেল বেলায় কথা দিলাম। যখন আবূ বাকর (রাঃ) যুহরের সালাত শেষ করলেন তখন তিনি মিম্বরে আরোহন করলেন এবং তাশাহুদ পাঠ করলেন। এরপর তিনি আলী (রাঃ) এর ঘটনা বর্ণনা করেন এবং তার বায়আত গ্রহণে বিলম্ব ও এ বিষয়ে তাঁর ওযর বর্ণনা করেন, যা আলী তার কাছে বর্ণনা করেছিল। এরপর তিনি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তারপর আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাশাহুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বাকর (রাঃ) এর মহত্ত্ব বর্ণনা করলেন। আর তিনি ব্যক্ত করলেন যে, তিনি যা করেছেন, তার কারণ আবূ বাকর (রাঃ) এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা কিংবা আল্লাহ তা’আলা তাকে যে সম্মান দিয়েছেন তার প্রতি অস্বীকৃতি নয়; বরং আমরা মনে করতাম যে, শাসন ক্ষমতায় (খিলাফতের) মধ্যে আমাদেরও অংশ আছে। কিন্তু আবূ বাকর (রাঃ) আমাদের বাদ দিয়ে একচ্ছত্ররূপে দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এতে আমরা মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছি।
এ কথা শুনে মুসলিমগণ আনন্দিত হলেন এবং তাঁরা বললেন যে, আপনি ঠিকই করেছেন। যখন তখন তিনি সঙ্গত বিষয়ের দিকে ফিরে এলেন আবূ বাকর (রাঃ) এর বায়আত গ্রহণ করলেন, তখন থেকে মুসলিমগণ আলী (রাঃ) এর সান্নিধ্যে আসতে লাগলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

সহীহ বুখারী (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
৫১/ মাগাযী (যুদ্ধাভিযান)
পরিচ্ছেদঃ ২২০২. খায়বারের যুদ্ধ
৩৯২০। ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ত্যাজ্য সম্পত্তি মদিনা ও ফাদকে অবস্থিত ফাই (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) এবং খায়বারের খুমুসের (পঞ্চমাংশ) অবশিষ্টাংশ থেকে মিরাসী স্বত্ব চেয়ে পাঠালেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) উত্তরে বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন, আমাদের (নবীদের) কোন ওয়ারিস হয় না, আমরা যা রেখে যাবো তা সাদকা হিসেবে পরিগণিত হবে। অবশ্য মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধরগণ এ সম্পত্তি কেবল ভোগ করতে পারেন। আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাদকা তাঁর জীবদ্দশায় যে অবস্থায় ছিল আমি সে অবস্থা থেকে সামান্যতমও পরিবর্তন করবো না। এ ব্যাপারে তিনি যে নীতিতে ব্যবহার করে গেছেন আমিও ঠিক সেই নীতিতেই কাজ করবো।
এ কথা বলে আবূ বকর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ)-কে এ সম্পদ থেকে কিছু প্রদান করতে অস্বীকার করলেন। এতে ফাতিমা (রাঃ) (মানবোচিত কারণে) আবূ বকর (রাঃ)-এর উপর নারাজ হয়ে গেলেন এবং তাঁর থেকে নিস্পৃহ হয়ে রইলেন। পরে তাঁর ওফাত পর্যন্ত তিনি (মানসিক সংকোচের দরুন) আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে কথা বলেননি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর তিনি ছয় মাস পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। এরপর তিনি ইন্তেকাল করলে তাঁর স্বামী আলী (রাঃ) রাতের বেলা তাঁর দাফন কার্য শেষ করে নেন। আবূ বকর (রাঃ)-কেও এ সংবাদ দেননি। এবং তিনি তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেন।
ফাতিমা (রাঃ) জীবিত থাকা পর্যন্ত লোকজনের মনে আলী (রাঃ) এর বেশ সম্মান ও প্রভাব ছিল। এরপর যখন ফাতিমা (রাঃ) ইন্তেকাল করলেন, তখন আলী (রাঃ) লোকজনের চেহারায় অসন্তুষ্টির চিহৃ দেখতে পেলেন। তাই তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর সাথে সমঝোতা ও তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণের ইচ্ছা করলেন। (ফাতিমা (রাঃ)-এর অসুস্থতা ও অন্যান্য) ব্যস্ততার দরুন এ ছয় মাসে তাঁর পক্ষে বায়আত গ্রহণে অবসর হয়নি। তাই তিনি আবূ বকর (রাঃ)-এর কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, আপনি আমার কাছে আসুন। তবে অন্য কেউ যেন আপনার সঙ্গে না আসে। কারণ আবূ বকর (রাঃ)-এর সঙ্গে উমর (রাঃ)-ও উপস্থিত হোক-তিনি তা পছন্দ করেননি। (বিষয়টি শোনার পর) উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, আপনি একা একা তাঁর কাছে যাবেন না। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তাঁরা আমার সাথে খারাপ আচরণ করবে বলে তোমরা আশংকা করছ? আল্লাহর কসম, আমি তাঁদের কাছে যাব।
তারপর আবূ বকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন। আলী (রাঃ) তাশাহ্‌হুদ পাঠ করে বললেন, আমরা আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ্ আপনাকে যা কিছু দান করেছেন সে সম্পর্কে অবগত আছি। আর যে কল্যাণ (অর্থাৎ খিলাফত) আল্লাহ্ আপনাকে দান করেছেন সে ব্যাপারেও আমরা আপনার সাথে হিংসা রাখি না। তবে খিলাফতের ব্যাপারে আপনি আমাদের উপর নিজের মতের প্রাধান্য দিয়ে যাচ্ছেন অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটাত্মীয় হিসেবে খিলাফতের কাজে (পরামর্শ দেওয়াতে) আমাদেরও কিছু অধিকার রয়েছে। এ কথায় আবূ বকর (রাঃ)-এর চোখ-যুগল থেকে অশ্রু ঝরতে লাগলো। এরপর তিনি যখন আলোচনা আরম্ভ করলেন কখন বললেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, আমার কাছে আমার নিকটাত্মীয় অপেক্ষাও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আত্মীয়বর্গ বেশি প্রিয়। আর এ সম্পদগুলোতে আমার এবং আপনাদের মধ্যে যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারেও আমি কল্যাণকর পথ অনুসরণে কোন কসুর করিনি। বরং এ ক্ষেত্রেও আমি কোন কাজ পরিত্যাগ করিনি যা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে করতে দেখেছি।
তারপর আলী (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) কে বললেনঃ যুহরের পর আপনার হাতে বায়আত গ্রহণের ওয়াদা রইল। যুহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর আবূ বকর (রাঃ) মিম্বরে বসে তাশাহ্‌হুদ পাঠ করলেন, তারপর আলী (রাঃ) এর বর্তমান অবস্থা এবং বায়আত গ্রহণে তার দেরি করার কারণ ও তাঁর (আবূ বকরের) কাছে পেশকৃত আপত্তিগুলো তিনি বর্ণনা করলেন। এরপর আলী (রাঃ) দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাশাহ্‌হুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বকর (রাঃ)-এর মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বললেন, তিনি বিলম্বজনিত যা কিছু করেছেন তা আবূ বকর (রাঃ)-এর প্রতি হিংসা কিংবা আল্লাহ্ প্রদত্ত তাঁর এ সম্মানের অস্বীকার করার মনোবৃত্তি নিয়ে করেননি। (তিনি বলেন) তবে আমরা ভেবেছিলাম যে, এ ব্যাপারে আমাদের পরামর্শও দেওয়ার অধিকার থাকবে। অথচ তিনি ( আবূ বকর ) আমাদের পরামর্শ ত্যাগ করে স্বাধীন মতের উপর রয়ে গেছেন। তাই আমরা মানসিকভাবে ব্যথা পেয়েছিলাম। (উভয়ের এ আলোচনা শুনে) মুসলমানগণ আনন্দিত হয়ে বললেন, আপনি ঠিকই করেছেন। এরপর আলী (রাঃ) আমল বিল মা’রূফ (অর্থাৎ রায়আত গ্রহণ)-এর দিকে ফিরে এসেছেন দেখে সব মুসলমান আবার তাঁর প্রতি ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আয়িশা (রাঃ)

তথ্যসূত্র

  1. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৩৪৪৭ []
  2. সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩০৯ []
  3. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৪৮৫০ []
  4. সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৯০, ৪৯১ []
  5. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিসঃ ৬০৮৮ []
  6. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬২৭০ [][]
  7. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ২৮৭৪ []
  8. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৪ []
  9. সহীহ বুখারী, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, হাদিস নম্বরঃ ৪০৩৫ []
  10. মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নম্বরঃ ৫৫ []
  11. সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৪৪২৮ []
  12. সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাদিস নম্বরঃ ৩৯২০ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন