03.নবী কি কোরআন সংকলন করতে বলেছিলেন?

Print Friendly, PDF & Email

কোরআনে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন [1]

আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।

আল্লাহ পাকের এই সরাসরি কোরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়ার পরেও, কোরআন হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল। হযরত মুহাম্মদের যুগে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন বস্তুর ওপর কোরআন সংরক্ষিত ছিল, তাই হজরত আবু বকরের খেলাফতের সময় বিক্ষিপ্ত অংশগুলো একত্র করে সংরক্ষণের প্রতি মনোযোগী হয়েছেন। হযরত উমরের আশঙ্কা ছিল, যুদ্ধে বহুসংখ্যক কোরআনে হাফেজের মৃত্যু হওয়ায় কোরআনের বড় অংশই হারিয়ে যাবে। সেই আশঙ্কা থেকেই তিনি কোরআনের আয়াতগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে বারবার তাগাদা দিতে থাকেন। অর্থাৎ আল্লাহ পাক নিজেই যা সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন, আল্লাহপাকের সরাসরি দায়িত্ব নেয়ার পরেও উমর তা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলেন এবং তা আসলে সংরক্ষণের মূল ভূমিকা যিনি পালন করেছিলেন তিনি হচ্ছেন হযরত উমর। একইসাথে উল্লেখ্য, হাদিস থেকে জানা যায়, নবী কোরআন সংকলনের কোন নির্দেশনা দিয়ে যাননি [2] [3]

মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-৮ঃ কুরআনের মর্যাদা
পাবলিশারঃ হাদিস একাডেমি
পরিচ্ছদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ – কিরাআতের ভিন্নতা ও কুরআন সংকলন প্রসঙ্গে
২২২০-(১০) যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়ামামার যুদ্ধের পর পর খলীফাতুর রসূল আবূ বাকর (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি গেলাম। দেখলাম ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) তাঁর কাছে উপবিষ্ট। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, ‘উমার আমার কাছে এসে খবর দিলেন, ইয়ামামার যুদ্ধে অনেক কুরআনের হাফেয শহীদ হয়ে গেছেন। আমার আশংকা হয়, বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধে এভাবে হাফেয শহীদ হতে থাকলে কুরআনের অনেক অংশ লোপ পেয়ে যাবে। তাই আমি সঙ্গত মনে করি যে, আপনি কুরআনকে মাসহাফ বা কিতাব আকারে একত্রিত করতে হুকুম দেবেন। আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, আমি ‘উমারকে বললাম, এমন কাজ কিভাবে আপনি করবেন, যে কাজ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি? ‘উমার (রাঃ) উত্তরে বললেন, আল্লাহর শপথ। এটা হবে একটা উত্তম কাজ। ‘উমার (রাঃ) এভাবে আমাকে বার বার বলতে লাগলেন। অতঃপর আল্লাহ এ কাজের গুরুত্ব বুঝার জন্য আমার হৃদয় খুলে দিলেন এবং আমিও এ কাজ করা সঙ্গত মনে করলাম।

(বুখারী)(1)
(1) সহীহ : বুখারী ৪৯৮৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ২৩৭২, সহীহ ইবনু হিববান ৪৫০৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

কোরআন বিলুপ্তির আশঙ্কা ও সংকলন

তথ্যসূত্র

  1. কোরআন হিজরঃ৯ []
  2. মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) হাদিস নম্বরঃ ২২২০ []
  3. সহিহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অষ্টম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৩৬ []
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © সংশয় - চিন্তার মুক্তির আন্দোলন