02.অজ্ঞতার কুযুক্তি | Argument from Ignorance

Print Friendly, PDF & Email

দাবীঃ যেহেতু তুমি জানো না, বিগ ব্যাং এর আগে কী ছিল, তাই আমার ঈশ্বরই বিগ ব্যাং ঘটিয়েছে!
দাবীঃ যেহেতু তুমি জানো না, মিশরের পিরামিডগুলো কীভাবে তৈরি করা হয়েছে, তাই পিরামিড তৈরির পেছনে এলিয়েনদের হাত রয়েছে!
দাবীঃ যেহেতু তুমি জানো না, আমার মাথায় কয়টি চুল, তাই আমার মাথায় ১৩ লক্ষ ২৫৬টি চুল রয়েছে!
দাবীঃ যেহেতু তুমি জানো না, প্রশান্ত মহাসাগরে কয়লিটার পানি আছে, মেনে নাও যে, সেখানে ৬ কোটি ৫৮ লক্ষ ১২৮ লিটার পানি আছে!

উপরের দাবীগুলো অজ্ঞতার কুতর্কের কিছু উদাহরণ। ধরুন কেউ দাবী করলো, তিনিই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন; এবং যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করলো, এই দাবীটি কেউ অপ্রমাণ করতে পারবে না, এবং আরও প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করলো মানুষের অজ্ঞতাকে। যেহেতু মানুষ কিছু বিষয় সম্পর্কে জানে না, বা মানুষের জ্ঞান যেহেতু সীমাবদ্ধ, বা তার কথাটি ভুল প্রমাণ করা হয় নি, সেহেতু তার দাবীটিই সঠিক!

বিগ ব্যাং এর আগে স্থান বা সময় যেহেতু ছিল না, ক্লাসিক্যাল পদার্থবিদ্যার কোন সূত্র যেহেতু সেখানে কাজ করতো না, সেহেতু কী ছিল, তা সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করতে পারি। জানাও সম্ভব হচ্ছে। তথ্য প্রমাণ এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের কোন অজানা বিষয় থাকার অর্থ এই নয় যে, অমুকের দাবীটি সঠিক। যেকোন অজানা বিষয়কে জানার পদ্ধতি হচ্ছে, তা নিয়ে পড়ালেখা করা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, তথ্য প্রমাণ যুক্তি দিয়ে জানার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। অমুকে করেছে বা তমুকে এমনটি ঘটিয়েছে তা ধরে নেয়া নয়। কোন অজানা বিষয় অপ্রমাণিত কোন কিছুর সপক্ষের যুক্তি বা প্রমাণ হতে পারে না।

কোন বিষয় সম্পর্কে আমরা যদি না জানি, তাহলে সেসম্পর্কে আমাদের একমাত্র যৌক্তিক অবস্থান হতে পারে যে, এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। জানি না মানে এটি হতে পারে না যে, সেটি আমি জানি যে এভাবে হয়েছে।